উচ্চ প্রিমিয়ামে তালিকাভুক্ত ৮০ শতাংশ কোম্পানির মুনাফা কমেছে

0

 

 

স্টকরিপোর্ট প্রতিবেদক: ২০২১ সালে উচ্চ প্রিমিয়াম নিয়ে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত অধিকাংশ কোম্পানির মুনাফা কমেছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির আগে কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে বাজারে আসায় এমন অবস্থায় পড়তে হয়েছে কোম্পানিগুলোকে। তাই তালিকাভুক্তির পর কোম্পানিগুলো সেই মুনাফার গ্রোথ ধরে রাখতে পারেনি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

২০২১ সালে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৮০ শতাংশের মুনাফা কমেছে। গত বছর বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ৫টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে। যার মধ্যে ৪টিরই কমেছে মুনাফা। এই পাঁচ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে পতেঙ্গা পাওয়ার, ইন্ডেক্স এগ্রো, মীর আক্তার হোসাইন, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার এবং লুব রেফ বাংলাদেশ লিমিটেড।

জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৫ জুলাই শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু করে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেড। তালিকাভুক্তির আগে ২০২০ সালের ৩০ জুন কোম্পানিটির আয় ছিল ৬৭ কোটি ৩৮ লাখ ৮২ হাজার ৫১৩ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ৪ টাকা ৩৭ পয়সা। আর ২০২২ সালের সালের ৩০ জুন মুনাফা কমে হয়েছে ২১ কোটি ৫২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। অর্থাৎ তালিকাভুক্ত হওয়ার পর মুনাফা কমেছে ৪৫ কোটি ৮৬ লাখ ২ হাজার ৫১৩ টাকা বা ৬৮ শতাংশ। তালিকাভুক্ত হওয়ার পর ২০২২ সালের ৩০ জুন কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) কমে দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ২৫ পয়সা। অর্থাৎ দুই বছরের ব্যবধানে কোম্পানির ইপিএস কমেছে ৩ টাকা ১২ পয়সা বা ৭১ শতাংশ।

এদিকে কোম্পানিটির কাট-অব প্রাইস ছিল ৩২ টাকা। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৯ টাকায় প্রতিটি শেয়ার ইস্যু করা হয়েছিল। সে অনুযায়ী কোম্পানির শেয়ারের প্রতি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ খুব একটা দেখা যায় না। বুধবার (১১ জানুয়ারি) কোম্পানির প্রতিটি শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ২৯ টাকা ৩০ পয়সায়।

ইন্ডেক্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ২০২১ সালের ৭ এপ্রিল শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু করে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির আগে কোম্পানিটির ২০১৯ সালের ৩০ জুন মুনাফা ছিল ২৭ কোটি ৫৭ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯৬ টাকা। আর ৩০ জুন ২০২২ সালে কোম্পানির মুনাফা কমে হয়েছে ২৪ কোটি ৫৯ হাজার টাকা। তালিকাভুক্ত হওয়ার পর আলোচ্য সময়ে কোম্পানির মুনাফা কমেছে ৩ কোটি ৫৬ লাখ ৮৪ হাজার ৯৯৬ টাকা বা ১৩ শতাংশ।

২০১৯ সালের ৩০ জুন কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ৭ টাকা ০৭ পয়সা। আর ২০২২ সালের ৩০ জুন কোম্পানির ইপিএস কমে দাঁড়ায় ৫ টাকা ০৯ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস কমেছে ১ টাকা ৯৮ পয়সা বা ২৮ শতাংশ।

কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি কাট-অব প্রাইস ছিল ৬২ টাকা। ১০ শতাংশ ডিসকাউন্টে প্রতিটি শেয়ারের দাম সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ৫৬ টাকায় ইস্যু করা হয়েছিল। সর্বশেষ বুধবার কোম্পানিটির শেয়ারদর ক্লোজিং হয়েছে ১০৩ টাকা ৬০ পয়সায়।

মীর আক্তার হোসেন লিমিটেড ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরে আয় করেছিল ৩৭ কোটি ৫০ লাখ ৬ হাজার ৯৯৭ টাকা। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর ২০২২ সালের ৩০ জুন কোম্পানিটির আয় কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। দুই বছরের ব্যবধানে কোম্পানির মুনাফা কমেছে ২ কোটি ১২ লাখ ৬ হাজার ৯৯৭ টাকা বা ৬ শতাংশ।

২০২০ সালের ৩০ জুন কোম্পানির ইপিএস ছিল ৩ টাকা ৭৫ পয়সা এবং ২০২২ সালের ৩০ জুন তা কমে দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ৯৩ পয়সায়। বুধবার কোম্পানির ক্লোজিং দের হয়েছে ৫০ টাকা ৮০ পয়সায়।

এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডের তালিকাভুক্তির আগে ২০১৯ সালে আয় ছিল ৪৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। ২০২২ সালের ৩০ জুন তালিকাভুক্ত হওয়ার পর কোম্পানির মুনাফা হয়েছে ৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা। তিন বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আশ্চর্যজনকভাবে মুনাফা কমেছে ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বা ৮৫ শতাংশ।

২০১৯ সালের ৩০ জুন কোম্পানির ইপিএস ছিল ৩ টাকা ১৩ পয়সা। আর ২০২২ সালের ৩০ জুন ইপিএস কমে দাঁড়িয়েছে ৩৮ পয়সায়। তিন বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির ইপিএস কমেছে ২ টাকা ৭৫ পয়সা বা ৮৮ শতাংশ। বুধবার কোম্পানির ক্লোজিং প্রাইস ছিল ৩৪ টাকা ৫০ পয়সা।

অন্যদিকে, লুব-রেফ (বাংলাদেশ) লিমিটেড শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তর হওয়ার পর ২০২১ সালের ০৯ মার্চ লেনদেন শুরু করে। তালিকাভুক্ত হওয়ার পর ২০২২ সালের ৩০ জুন কোম্পানির আয় হয়েছিল ৩১ কোটি টাকা। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির আগে ২০১৯ সালে ৩০ জুন মুনাফা ছিল ২০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। ৩ বছরের ব্যবধানে কোম্পানির মুনাফা বেড়েছে ১০ কোটি ২৪ লাখ টাকা বা ৪৯ শতাংশ।

২০১৯ সালের ৩০ জুন কোম্পানির ইপিএস ছিল ২ টাকা ০৮ পয়সা। আর ২০২২ সালের ৩০ জুন তা এসে দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ১৩ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির ইপিএস বেড়েছে ০৫ পয়সা। বুধবার কোম্পানির শেয়ারদর ক্লোজ হয়েছে ৩৬ টাকা ৮০ পয়সায়।

Leave A Reply

Your email address will not be published.