ওয়েবসাইটে কোম্পানির তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ বিএসইসির

0

স্টকরিপোর্ট প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কয়েকটি কোম্পানির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিজেদের শেয়ার বিক্রি করে দিলেও সেই তথ্য স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে হালনাগাদ করেনি। কয়েকটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মারা গেছেন, কিন্তু সেটাও হালনাগাদ করা হয়নি। কয়েকটি কোম্পানি আর্থিক প্রতিবেদনও হালনাগাদ করেনি। কয়েক বছর আগের আর্থিক প্রতিবেদন প্রদর্শিত হচ্ছে। এসব কারণে কোম্পানিগুলোর ওয়েবসাইটের তথ্য হালনাগাদ করার নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ওয়েবসাইটের তথ্য হালনাগাদ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিএসইসি সূত্রে জানা যায়, উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে এই সংক্রান্ত একটি চিঠি ইতোমধ্যে প্রেরণও করেছে বিএসইসি।

বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, স্টক এক্সচেঞ্জ সমূহের সাম্প্রতিক বা চলতি সময়ের বার্ষিক প্রতিবেদন, নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন এবং পরিচালনা পর্ষদের তালিকা হালনাগাদকরণ পূর্বক ওয়েবসাইটে আপলোডের প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পরবর্তী সাত কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনে পাঠানোর নির্দেশ করা হয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত বছরের ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে শেয়ারবাজারে প্রকৌশল খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এসএস স্টিলের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন তথ্যের ঘাটতি ও তথ্যে অপূর্ণতা থাকার অভিযোগ উঠে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (লিস্টিং) রেগুলেশন, ২০১৫ এর রেগুলেশন ৩৭(২) অনুসারে কোম্পানিটিকে ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেয় প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।

এসএস স্টিলের ওয়েবসাইট সম্পর্কে অভিযোগ রয়েছে, যেন তেনভাবে, দায়সারা কিছু তথ্য দিয়ে চলছে এসএস স্টিলের ওয়েবসাইট। শেয়ারবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করে ব্যবসা করলেও বিনিয়োগকারীদের সুবিধার জন্য যেসব তথ্য থাকার কথা তার তেমন কিছুই নেই ওয়েবসাইটে। যা আছে, তাও হালনাগাদ করা হয়নি। ফলে, হালনাগাদ ও আধুনিকায়নের অভাবে এসএস স্টিলের ওয়েবসাইট থেকে ডিজিটাল তথ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ শেয়ারহোল্ডারসহ সংশ্লিষ্টরা।

কোম্পানিটির ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) পর্যন্ত এসএস স্টিলের ওয়েবসাইটে ইনভেস্টর রিলেশনস ক্যাটাগরিতে অ্যানুয়াল রিপোর্টস ও অডিটেড নামে সাব ক্যাটাগরিতে অডিটেড রিপোর্ট থাকলেও কোনো অ্যানুয়াল রিপোর্ট (বার্ষিক প্রতিবেদন) পাওয়া পাওয়া যায়নি।

এদিকে গত বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহের দিকে ইস্টার্ন কেবলস, আমান ফিড ও কে অ্যান্ড কিউয়ের ওয়েবসাইটে ২০২১ সালে সমাপ্ত অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন নেই বলে অভিযোগ জানায় ডিএসই। আর কোম্পানিগুলোর কাছে ওয়েবসাইটে সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন না থাকার কারণ ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।

তবে বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) পর্যন্ত ইস্টার্ন কেবলস ও কে অ্যান্ড কিউয়ের ওয়েবসাইটে সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন হালনাগাদ করা হলেও আমান ফিডের ওয়েবসাইট বন্ধ পাওয়া যায়। তাদের ওবসাইটে লিখা রয়েছে, ওয়েবসাইটটি রক্ষণাবেক্ষণাধীন।

এই বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কয়েকটি কোম্পানির এমডি ও চেয়ারম্যান তাদের শেয়ার বিক্রি করে দিলেও এখনো ওয়েবসাইট তথ্য হালনাগাদ করা হয়নি। কয়েকটি কোম্পানির এমডি মারা গেছে, সেটাও হালনাগাদ করা হচ্ছে না। পাশাপাশি আর্থিক প্রতিবেদন গত কয়েক বছর আগের পুরানো তথ্য দেখানো হচ্ছে। দুই মাস আগে একবার বলেছি। আবারও বলছি, আগামী সাতদিনের মধ্যে কোম্পানিগুলোর তথ্য হালনাগাদ করতে। অন্যথায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কমিশন কঠোর ব্যবস্থা নিবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.