ক্যাটাগরি পরিবর্তনের ৭ দিন পরই ঋণ পাবেন বিনিয়োগকারীরা

মার্জিন ঋণ নীতিমালায় পরিবর্তন

0

নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ার কেনার জন্য মার্জিন ঋণ নীতিমালায় পরিবর্তন এনেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এখন থেকে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্যাটাগরি পরিবর্তন হওয়ার সাতদিন পর থেকেই সেই শেয়ারে বিনিয়োগের জন্য মার্জিন ঋণ পাবেন বিনিয়োগকারীরা। গতকাল রবিবার (২৬ ডিসেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৮০৪তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

কমিশন সভাশেষে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ‘জেড’ ক্যাটাগরির সিকিউরিটি ছাড়া বিদ্যমান কোনো তালিকাভুক্ত সিকিউরিটির ক্যাটাগরি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে মার্জিন ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকবে না। তবে এক্ষেত্রে তালিকাভুক্ত কোনো সিকিউরিটি ‘জেড’ ক্যাটাগরি থেকে উচ্চতর কোনো ক্যাটাগরিতে উন্নীত হলে ক্যাটাগরি পরিবর্তনের দিন থেকে প্রথম ৭ দিন কার্যদিবস পর্যন্ত এটি কেনার জন্য মার্জিন ঋণ দেয়া যাবে না। স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোনো সিকিউরিটিজ কেনার জন্য মার্জিন ঋণ দেয়া যাবে না। এছাড়া নতুন তালিকাভুক্ত সিকিউরিটি কেনার ক্ষেত্রে স্টক এক্সচেঞ্জে কোম্পানিটির লেনদেন শুরু হওয়ার পর থেকে প্রথম ৩০ কার্যদিবস পর্যন্ত কোনো মার্জিন ঋণ দেয়া যাবে না।

কমিশন সভার এ সিদ্ধান্তের পরই গতকাল বিএসইসির পক্ষ থেকে এ-সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়েছে। অবিলম্বে এটি কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে কমিশন। পাশাপাশি ২০১৫ সালের ২৭ অক্টোবর জারি করা এ-সংক্রান্ত কমিশনের আগের আদেশটি বাতিল করা হয়েছে। আগের আদেশ অনুসারে, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোনো সিকিউরিটির ক্যাটাগরি পরিবর্তন হওয়ার পর প্রথম লেনদেনের দিন থেকে ৩০ কার্যদিবস পর্যন্ত মার্জিন ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ ছিল।

পুুঁজিবাজারে তারল্য সরবরাহ বাড়ানোর লক্ষ্যে গত বছর থেকেই মার্জিন ঋণ নীতিমালা বেশকিছু পরিবর্তন ও ছাড় দিয়েছে বিএসইসি। সর্বশেষ এ বছরের ১২ আগস্ট জারি করা আদেশে সূচকের সঙ্গে মার্জিন ঋণ প্রদানের নীতিমালা সমন্বয় করা হয়েছে।

আদেশ অনুসারে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স ৮ হাজার পয়েন্টের নিচে থাকলে বিনিয়োগকারীরা ১: দশমিক ৮০ অনুপাতে মার্জিন ঋণ পাবেন। অর্থাৎ একজন বিনিয়োগকারীর যত টাকার বিনিয়োগ রয়েছে তার ৮০ শতাংশ অর্থ তিনি মার্জিন ঋণ হিসেবে পাবেন। আর ডিএসইএক্স সূচক ৮ হাজার ১ বা এর বেশি হলে সেক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা ১: দশমিক ৫০ অনুপাতে মার্জিন পাবেন। এর মানে মোট বিনিয়োগকৃত অর্থের অর্ধেক মার্জিন ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে।

এর আগে এ বছরের ৪ এপ্রিল জারি করা নির্দেশনা অনুসারে, ডিএসইএক্স সূচক ৭ হাজারের নিচে থাকলে ১: দশমিক ৮০ অনুপাতে এবং সূচক ৭ হাজার ১ বা এর বেশি হলে ১: দশমিক ৫০ অনুপাতে মার্জিন ঋণ প্রদানের সর্বোচ্চ হার নির্ধারণ করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর সূচক বাড়ার সঙ্গে আনুপাতিক হারে মার্জিন ঋণের হার কমার শর্তারোপ করে নির্দেশনা জারি করেছিল কমিশন। নির্দেশনা অনুসারে ডিএসইএক্স সূচক ৪ হাজারের নিচে থাকলে গ্রাহকদের ১:১, সূচক ৪০০১ থেকে ৫০০০ পর্যন্ত থাকলে ১: দশমিক ৭৫, ৫০০১ থেকে ৬০০০ থাকলে ১: দশমিক ৫০, ডিএসইএক্স ৬ হাজার বা তার বেশি হলে ১: দশমিক ২৫ অনুপাতে মার্জিন ঋণ দেয়া যাবে। গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে এ আদেশ কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। অবশ্য এর এক সপ্তাহের মধ্যে মার্জিন ঋণ প্রদান নীতিমালায় কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়।

গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর জারি করা পরিবর্তিত নীতিমালা অনুসারে ডিএসইএক্স সূচক ৪ হাজারের নিচে থাকলে গ্রাহকদের ১: দশমিক ৭৫, সূচক ৪০০১ থেকে ৭০০০ পর্যন্ত থাকলে ১: দশমিক ৫০, এবং সূচক ৭০০১ বা এর বেশি হলে ১: দশমিক ২৫ অনুপাতে মার্জিন ঋণ দেয়া যাবে। এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ আদেশ কার্যকর করার কথা বলা হয়েছিল সে সময়। যদিও এ বছরের ৪ এপ্রিল জারি করা আদেশের মাধ্যমে গত বছরের আদেশটির কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়েছে। আর ৪ এপ্রিল জারি করা আদেশ এ বছরের ১২ আগস্ট জারি করা আদেশের মাধ্যমে রহিত হয়ে গেছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.