তিন সপ্তাহ পর শেয়ারবাজারের উন্নতি

0

স্টকরিপোর্ট প্রতিবেদক : টানা দরপতন থেকে বেরিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস আজ রবিবার (২ এপ্রিল) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম। সেইসঙ্গে ডিএসইতে পাঁচশ কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে।

এর আগে শেয়ারবাজারে টানা তিন সপ্তাহ দরপতন হয়। তবে গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে সাড়ে ছয়শ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়।

এরপর শুক্রবার (৩১ মার্চ) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত ইফতার পার্টিতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়াম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজার তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে চলেছে।

তিনি বলেন, এ বাজারের মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগ আনার জন্য বিভিন্ন দেশে যে রোড শো আয়োজন করা হয়েছিল, সেগুলোর সুফল আসতে শুরু করেছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নানা বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। বাংলাদেশ সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে। এভাবে এগোতে থাকলে অবশ্যই আমরা উন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হবো।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যানের কাছ থেকে এমন বক্তব্য আসার পর রোববার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে যায়।

লেনদেনের শুরুতে সূচকের এমন ঊর্ধ্বমুখি প্রবণতা দেখা দিলেও অল্প সময়ের মধ্যে তালিকাভুক্ত অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠান ক্রেতা সংকটে পড়ে। ক্রেতা সংকটে পড়ে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে (সর্বনিম্ন দাম) আটকে থাকে লেনদেনের প্রায় পুরো সময়জুড়ে।

ক্রেতা সংকটে পড়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে নতুন করে আরও ছয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম ফ্লোর প্রাইসে এসে ঠেকেছে। এতে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকে।

এমন বিপুল পরিমাণ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকার দিনে ডিএসইতে ৮৩ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৬টির এবং ১৯৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১০ পয়েন্ট বেড়ে ছয় হাজার ২১৭ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৩৫২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ২০৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সবকটি মূল্যসূচক বাড়লেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। অবশ্য এরপরও লেনদেন পাঁচশ কোটি টাকার ওপরে হয়েছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৫৩১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬৬৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১৩৫ কোটি টাকা।

এ লেনদেন বাড়াতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার। টাকার অংকে কোম্পানিটির ৩৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ৩৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইস্টার্ন হাউজিং।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন, ওরিয়ন ফার্মা, আমরা নেটওয়ার্ক, ইউনিক হোটেল, আরডি ফুড, সি পার্ল বিচ রিসোর্টের এবং এডিএন টেলিকম।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ১৩৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫২টির দাম বেড়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.