শেয়ারবাজারে প্রবাসীদের বিনিয়োগ সহজ করল বাংলাদেশ ব্যাংক

0

স্টকরিপোর্ট প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে প্রবাসীদের বিনিয়োগ সহজ করার জন্য অবশেষে ব্যাংক হিসাব খোলা সহজ করে সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল বুধবার (২৭ জুলাই) বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) পরিচালক মো: রফিকুল ইসলাম সাক্ষরিত চিঠি বাংলাদেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে।

প্রবাসীরা এতোদিন শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে চাইলেও ব্যাংক হিসাব খোলার জটিলতা প্রধান অন্তরায় হিসেবে কাজ করেছে। যে কারণে তাদের ইচ্ছা সত্ত্বেও বিনিয়োগ করতে পারছে না। অবশেষে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রবাসীদের জন্য ব্যাংক হিসাব খোলা সহজ করে একটি সার্কুলার জারি করেছে।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, প্রবাসীদের ব্যাংক হিসাব খোলার ক্ষেত্রে কাগজপত্র বিদেশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সত্যায়নের শর্ত আরোপ করা হয়ে থাকে। কিন্তু বিএফআইইউ এর কোন নির্দেশনায় এই শর্তের কথা উল্লেখ নেই। তাই প্রবাসীদের ব্যাংক হিসাব খোলার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দূতাবাস থেকে সত্যায়নের দরকার নেই। যা অবলিম্বে কার্যকর হবে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নির্দেশনার মাধ্যমে প্রবাসীদের দেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা সহজ হয়েছে। কারণ ব্যাংক হিসাব খোলার জটিলতার কারণে অনেকেই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে পারছিলেন না।

এই বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, প্রবাসীদেরকে দেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সর্ম্পক্যে এরইমধ্যে রোড শো করে জানানো হয়েছে। কিন্তু তারপরেও ব্যাংক হিসাব খোলার জটিলতার কারণে প্রবাসীরা বিনিয়োগে আসছিল না। যে জটিলতা বাংলাদেশ ব্যাংক গতকালকের নির্দেশনার মাধ্যমে দূর করে দিয়েছে। এতে করে শেয়ারবাজারে প্রবাসীদের বিনিয়োগ বাড়বে। তিনি এই জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে আবদুর রউফ তালুকদারের নিয়োগের পর শেয়ারবাজারসংক্রান্ত নীতিতে পরিবর্তনের আভাস দেখা যাচ্ছে। বিএসইসির দীর্ঘদিনের সুপারিশ অনুযায়ী বাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগের হিসাব বাজারমূল্যের বদলে ক্রয়মূল্যে নির্ধারণের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে দেশের আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

গভর্নর হিসাবে আবদুর রউফ তালুকদারের যোগদানের পর পরই বিষয়টি সুরাহা করার উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটি শেয়ারবাজারের প্রতি আগ্রহের একটি বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে বাজারমূল্য অথবা ক্রয়মূল্যের মধ্যে যেটি বেশি, সেটি ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিট ধরা হয়। এটিকে শেয়ারবাজারে দীর্ঘমেয়াদি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি বাধা হিসেবে ধরা হয়।

এর পাশাপাশি বন্ডে বিনিয়োগকেও ব্যাংকের বিনিয়োগসীমার বাইরে রাখার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মত জানতে চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অন্যদিকে, ইতোমধ্যে সিকিউরড বন্ডে বিনিয়োগ ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমার বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

ফজলে কবিরের গভর্নর থাকাকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিএসইসির এই দুটি সুপারিশের বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

এর আগে ১৯ বছর পর এক কর্মকর্তার দপ্তর পাল্টানো হয়, যাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের শেয়ারবাজার বিষয়ক রক্ষণশীল নীতির জন্য দায়ী করা হয়ে আসছিল।

Leave A Reply

Your email address will not be published.