৭ ব্রোকারেজ হাউজের বিরুদ্ধে বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

0

 

স্টকরিপোর্ট প্রতিবেদক: সাম্প্রতিক সময়ে ব্রোকারেজ হাউজে একাধিক ব্যাক অফিস সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে একাধিক ব্যাক অফিস সফটওয়্যার ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানের তথ্য জানতে চেয়ে স্টক এক্সচেঞ্জগুলোকে চিঠি দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। জবারে স্টক এক্সচেঞ্জ বিএসইসিকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছে, বর্তমানে একাধিক সফটওয়্যার ব্যবহার করছে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা সাতটি।

জানা গেছে, বিএসইসির কাছে ডিএসইর পাঠানো একাধিক সফটওয়্যার ব্যবহারী প্রতিষ্ঠানের তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সাতটি ব্রোকারেজ হাউস একাধিক সফটওয়্যার ব্যবহার করছে। এর মধ্যে পাঁচটি ব্রোকারেজ হাউসের নাম জানা গেছে। এগুলো হলো- কান্ট্রি স্টক (বাংলাদেশ) লিমিটেড, আইসিবি সিকিউরিটিজ ট্রেডিং কোম্পানি, লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজ, মিরর ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট এবং ফারইস্ট স্টক অ্যান্ড বন্ডস লিমিটেড।

অভিযোগ রয়েছে, গ্রাহকের সমন্বিত হিসাব থেকে টাকা সরালে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও স্টক এক্সচেঞ্জ যাতে বুঝতে না পারে, সেজন্য আলাদা সফটওয়্যার ব্যবহার করছে কিছু কিছু ব্রোকারেজ হাউস। ডিএসইর ২০১৭-১৮ থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছরের কমপ্লায়েন্স নিরীক্ষা করে বাণিজ্যিক অডিট অধিদপ্তর দেখেছে, ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ অসৎদুদ্দেশ্যে একাধিক সফটওয়্যার ব্যবহার করে গ্রাহকের ১০৫ কোটি টাকা সরিয়ে ফেলেছে।

অডিট অধিদপ্তরকে ডিএসই জানিয়েছে, ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ আলাদা সফটওয়্যার ব্যবহার করতো কি না, তা প্রতিষ্ঠানটি স্বেচ্ছায় না জানালে ডিএসইর তদন্তকারী কর্মকর্তার পক্ষে জানা সম্ভব নয়।

বিএসইসির কাছে ডিএসইর পাঠানো সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সাতটি ব্রোকারেজ হাউস একাধিক সফটওয়্যার ব্যবহার করছে। এর মধ্যে ব্রোকারেজ হাউস কান্ট্রি স্টক (বাংলাদেশ) লিমিটেড ব্যবহার করছে ব্লু চিপ ও এক্স ব্রোকার নামের দুটি সফটওয়্যার।

আইসিবি সিকিউরিটিজ ট্রেডিং কোম্পানি ব্যবহার করছে ব্লু চিপস, এক্স ব্রোকার এবং এএসএপিএস নামক তিনটি সফটওয়্যার।

লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজ ব্যবহার করছে ব্লু চিপস। এনজিবিও লঙ্কাবাংলা ইনফরমেশন সিস্টেম নামে আরেকটা সফটওয়্যার পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করছে লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজ।

এছাড়াও মিরর ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট ব্যবহার করছে এডিএ সফট এবং আবু সফট নামক দুটি সফটওয়্যার। ফারইস্ট স্টক অ্যান্ড বন্ডস ব্যবহার করছে ব্লু চিপস এবং এডিএ সফট নামক দুটি সফটওয়্যার।

এর আগে ব্রোকারেজ হাউজে একাধিক ব্যাক অফিস সফটওয়্যার ব্যবহার কর হয় এমন প্রতিষ্ঠান খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কমিশনের পক্ষ থেকে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে এই সংক্রান্ত একটি চিঠিও পাঠানো হয়েছে।

বিএসইসির চিঠিতে যেসব ব্রোকারেজ হাউজ একাধিক ব্যাক অফিস সফটওয়্যার ব্যবহার করে, তাদের কাছ থেকে স্টক এক্সচেঞ্জকে ব্যাখ্যা নিতে বলা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে তদন্ত করবে স্টক এক্সচেঞ্জ। এই ধরনের সফটওয়্যার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তালিকাভুক্ত করে সফটওয়্যার সরবরাহের আগে স্টক এক্সচেঞ্জের অনুমোদন নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া ট্রেকহোল্ডারদের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার ইনস্টলেশনের ক্ষেত্রে নীতিমালা প্রণয়নের জন্য বলা হয়েছে স্টক এক্সচেঞ্জকে। পাশাপাশি দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রতিদিনের লেনদেনের তথ্য সংরক্ষণের জন্য ব্যাকআপ নীতিমালা তৈরি করতেও বলা হয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.