অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এক্সপোজার ইস্যুতে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত: বিএসইসি চেয়ারম্যান

0

 

স্টকরিপোর্ট ডেস্ক: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই বিনিয়োগ সীমা বা এক্সপোজার লিমিটি ইস্যুতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক এক্সপোজার লিমিট পরিবর্তনে অনুমতির জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। আজ রবিবার সিএমজেএফ টক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, এক্সপোজার ইস্যুতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবের উপস্থিতিতে আমরা এই বিষয়ে আলাপ আলোচনা করেছি। বিষয়টি এখন প্রক্রিয়াধীন আছে। বর্তমান গভর্নর যখন অর্থসচিব ছিলেন তখন আমরা এই বিষয়ে বিস্তারিত প্রেরণ করেছিলাম। উনার সুপারিশ নিয়ে তখনই এই কাগজপত্র বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রেরণ করা হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের উপরের মহল ঠিক থাকলেও নিচের মহল থেকে কিছু কর্মকর্তা বিষয়টিকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করার কারণে সাবেক গভর্নর এই বিষয়ে আর সিদ্ধান্ত দিতে পারেননি।

সার্কিট ব্রেকার আরোপের ক্ষেত্রে শিবলী রুবাইয়াত বলেন, আমরাও দর কমার ক্ষেত্রে ২ শতাংশ সার্কিট ব্রেকার এবং ফ্লোর প্রাইস দিতে চাই না। কিন্তু সাধারণ বিনিয়োগকারীদেরকে রক্ষা করার জন্য দিতে বাধ্য হয়েছি। কারণ আমাদের দেশে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেশি। উন্নত দেশে শিক্ষিত ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় এমনটি করা লাগে না।

কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বড় বিনিয়োগকারীরা সাপোর্ট দেবেন বলার পরেও বাজারের পতনের কারণ হিসেবে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ওই সভার পরে বড় বিনিয়োগকারীরা কিনেছিল। তবে আমাদের দেশে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেশি। তারা এতো পরিমাণ বিক্রির চাপ দিচ্ছিলেন, যা বড়রা কুলিয়ে উঠতে পারেনি। এরমধ্যে আবার নানা ধরনের নেতিবাচক খবর বাজারে প্রভাব ফেলেছে।

শিবলী রুবাইয়াত বলেন, মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নিজেদেরকে পোর্টফোলিও ম্যানেজ করতে হয় না। যা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রফেশনাল লোকজন দিয়ে ম্যানেজ করা হয়। যার ফলে ভালো রিটার্ন পাওয়া যায়। গত ২ বছরের বিশ্লেষণে ৮০-৯০ শতাংশ মিউচ্যুয়াল ফান্ড থেকে ১০-১২ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিতে দেখেছি। এবছরও ভালো ডিভিডেন্ড দেবে বলে আশা করছি। তাই যারা বাজার সর্ম্পক্যে ভালো বুঝেন না, তারা মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন।

রোড শোর সফলতা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বিদেশে টাকা আনতে যাই না। দেশকে ব্র্যান্ডিং করতে যাই। দেশের প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরতে যাই। এখন অনেকেই বাংলাদেশকে ভালোভাবে জানে। যে কারণে অনেকে আমাদের দেশে বিনিয়োগের জন্য যোগাযোগ করছেন।

ক্যাপিটাল ম্যার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে (সিএমএসএফ) অবণ্টিত লভ্যাংশ না দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে শিবলী রুবাইয়াত বলেন, যারা এখনও দেয়নি, তাদের জরিমানাসহ আগামীতে দিতে হবে। এটা অনেকটা দৈনিক ভিত্তিতে সুদ গণনার মতো হবে। এ লক্ষ্যে গেজেট প্রকাশের জন্য কাজ করা হচ্ছে।

আয় থেকে শাস্তি কম দেওয়ার বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান বলেন, আমাদের অনেক পুরাতন অভিযোগ দেখতে হচ্ছে। যা ১০-১৫ বছর আগেরও আছে। তারপরও আমরা বিগত ২ বছরে যে পরিমাণ শাস্তি প্রদান করেছি, তা আগের ১০ বছরেও করা হয়নি। এর মধ্যে আবার করোনায় সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার দিকটিও বিবেচনা করতে হচ্ছে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ভালো কোম্পানি আনার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। তবে সবাই চায় ভালো অ্যাকাউন্টস জমা দিয়ে আসতে। এই কারণে অনেকে আসার জন্য অপেক্ষা করছে। হয়ত জুন ক্লোজিংয়ের হিসাবে কয়েকটি ভালো কোম্পানির আবেদন জমা পড়তে পারে। তবে আমরা যখন ভুয়া অ্যাকাউন্টস বুঝতে পারি, তখন সেসব আইপিও ফাইল বাতিল করে দেই।

এসময় অনেক ভালো কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসতে না চাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এটি অনেকটা কোম্পানির পর্ষদের মানসিক সমস্যা। তারা ভাবে কোম্পানি যেহেতু ভালো ব্যবসা করছে, সেহেতু শেয়ারবাজারে কেন যাব। এছাড়াও কোম্পানির মালিকানা অন্যদের হাতে ছাড়তে চায় না। এজিএমে অপমানিত হতে হবে ভেবেও আসতে চায় না।

Leave A Reply

Your email address will not be published.