তামহা সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে শতকোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগ

0

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: জালিয়াতির মাধ্যমে ডুপ্লিকেট সফটওয়্যার ব্যবহার করে শেয়ারবাজারের দুই শতাধিক বিনিয়োগকারীর প্রায় শত কোটি টাকা লুটে নিয়েছে ডিএসইর সদস্য প্রতিষ্ঠান তামহা সিকিউরিটিজ লিমিটেড। ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা তাদের টাকা আদায়ের জন্য এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। ইতোমধ্যে হাউসটির লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হলেও টাকা আদায়ের কোনো উদ্যোগ নেই। ফলে এসব কার্যক্রমের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) গাফিলতিকে দায়ী করছেন ভুক্তভোগীরা।

গতকাল বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর পল্টনে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করা হয়। তামহা সিকিউরিটিজের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ফখরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, তামহা সিকিউরিটিজের মালিক ডুপ্লিকেট সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীদের সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। বিএসইসি ওই সিকিউরিটিজের শেয়ার লেনদেন স্থগিত করে দেওয়ার পর আমরা সিডিবিএলে যোগাযোগ করে জানতে পারি আমাদের হিসাবে কোনো শেয়ার নেই।

তিনি বলেন, তামহা কর্তৃপক্ষ আমাদের দুই শতাধিক বিনিয়োগকারীর মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে ডুপ্লিকেট সফটওয়্যার ব্যবহার করে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের তথ্য আমাদের ফোনে এসএমএস ও মেইল পাঠাতো। এ কারণে আমারা তাদের জালিয়াতি বুঝতে পারিনি। সিকিউরিটিজ হাউজটির মালিকসহ তার দুই বোন প্রায় শতকোটি টাকা লুটপাট করে নিয়েছ।

ফখরুল ইসলাম বলেন, বিনিয়োগকারীদের আবেদন ছাড়া কিভাবে সিডিবিএল মোবাইল নাম্বার পরিবর্তন করল? বিএসইসি এবং ডিএসইর মনিটরিংয়ের অভাবে আমরা সবকিছু হারিয়ে পথে বসে গেছি। নিয়ন্ত্রক সংস্থা যদি ঠিক মতো মনিটরিং করত তাহলে এ ধরনের জালিয়াতি ঘটত না।

তামহা সিকিউরিটিজের মালিক ডা. হারুন বিনিয়োগকারীদের এই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, যতদ্রুত সম্ভব তাকে বিচারের আওতায় এনে আমাদের টাকা ও শেয়ার ফেরতের উদ্যোগ নিতে বিএসইসির চেয়ারম্যানের প্রতি অনুরোধ জানাই।

বিএসইসি চেয়ারম্যানের প্রতি অনুরোধ করে বিনিয়োগকারীদের পক্ষে ফখরুল ইসলাম বলেন, যতো দ্রুত সম্ভব আমাদের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। আমাদের শেষ সম্বলটুকু এখানে বিনিয়োগ করেছিলাম। কিন্তু আমরা এখন সবই হারালাম। আমাদের বাঁচান, পুঁজিবাজারকে বাঁচান। না হলে দেশের অর্থনীতিতে এর প্রভাব পরবে।

এই সময় তামহা সিকিউরিটিজে ক্ষতিগ্রস্থ বিনিয়োগকারী বাবুল, নজরুল ইসলাম, মজিবুর রহমান, আবু তাহের, মো. ফকরুল ইসলাম, রওশনারা হোসেন, সোহরাব হোসেন, সোহেল সাহেব, রুহুল হোসেন, শাজাহান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) গত বছরের ৯ ডিসেম্বর বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পেয়ে স্টক ব্রোকারেজ হাউজ তামহা সিকিউরিটিজের বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়।

এদিকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুরোধে গত ৫ জানুয়ারি তামহা সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হারুনুর রশিদসহ প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

Leave A Reply

Your email address will not be published.