দেশের প্রথম মাল্টিমডাল টার্মিনাল নির্মাণ করছে সাইফ পাওয়ার

0

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম বন্দরের স্টেডিয়ামের মুখে কার অকশন শেডের পেছনে হালি শহরে বাংলাদেশ রেলওয়ের নিজস্ব পরিত্যক্ত স্থানে মাল্টিমডাল কন্টেইনার টার্মিনাল স্থাপন করছে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি সাইফ পাওয়ার গ্রুপ। আধুনিক বিশ্বের সব সুবিধা নিয়ে ইলেকট্রিক ও সোলার পাওয়ার ব্যবহার করে পরিচালিত হবে এই টার্মিনাল। আধুনিক যন্ত্রপাতি, সর্বাধুনিক প্রযুক্তি স্ক্যানার এবং আইএসপিএসের সব নিয়ম কানুন মেনে এ টার্মিনাল পরিচালিত হবে।

আজ শনিবার (৫ জানুয়ারি) বিকালে কন্টেনার নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. হুমায়ুন কবীর, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (পূর্ব), চট্টগ্রাম মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের সহযোগী প্রতিষ্ঠান কন্টেইনার কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বেলাল হোসেন, সাইফ পাওয়ার গ্রুপের পরিচালক ও সাইফ লজিস্টিকস অ্যালায়েন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল সাইফসহ অনেকে।

রেলমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পরবর্তীকালে বাংলাদেশ রেলওয়েকে লাভজনক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বেশ কিছু প্রদক্ষেপ গ্রহন করেছিলেন। কিন্তু ৭৫’এর ১৫ আগষ্ট তাকে স্বপরিবারে হত্যার পর সেই প্রদক্ষেপ বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই সব প্রদক্ষেপ বাস্তবায়ন করার নির্দেশ দেন। তারই আঙ্গিকে বাংলাদেশ রেলওয়ে আয়ের উৎস বাড়াতে রেলওয়ের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান কন্টেইনার কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (সিসিবিএল) গঠন করা হয়।

রেলের পরিত্যক্ত স্থানে পাবলিক পার্টনারশীপ হিসেবে সাইফ লজিস্টিকস অ্যালায়েন্স লিমিটেডের সাথে একটি মাল্টিমডাল কন্টেইনার টার্মিনাল প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এটি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাজ; বাংলাদেশ রেলওয়ে বা সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর একটি প্রদক্ষেপ।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর এখন বছরে ৩২ লাখ টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করে। আর সেই ৩২ লাখ টিইইউএস এর মাত্র ৫ শতাংশ কন্টেইনার বাংলাদেশ রেলওয়ের মাধ্যেমে ব্যবহার হয়। এই ৫ শতাংশ থেকে ১০-১৫ শতাংশ কন্টেইনার বাংলাদেশ রেলওয়ের মাধ্যেমে ব্যবহার বাড়াতে হবে। এতে যেমন সড়কপথের উপর চাপ কমবে, তেমনি বাংলাদেশে রেলওয়ের অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় হবে।

সাইফ পাওয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল সাইফ বলেন, এটি হবে দেশের একমাত্র প্রথম পরিবেশবান্ধব মাল্টিমডাল গ্রীন কন্টেইনার টার্মিনাল। এ টার্মিনালের সাথে সড়কপথ, রেলপথ এবং সমূদ্রপথের সরাসরি যোগাযোগ থাকবে। তবে মাল্টিমডাল টার্মিনালটি হবে গ্রীন টার্মিনাল। এখানে কোন জ্বালানী তেল দিয়ে যন্ত্রপাতি পরিচালিত হবে না।

এখানকার সব যন্ত্র ইলেকট্রিক ও সোলার পাওয়ার ব্যবহার করে পরিচালিত হবে। উন্নত দেশের আধুনিক টার্মিনালের মতো সব অপারেশানাল কাজ পরিচালনা করা হবে। আধুনিক যন্ত্রপাতি, সর্বাধুনিক প্রযুক্তি স্ক্যানার এবং আইএসপিএসের সব নিয়মকানুন মেনে এ টার্মিনাল পরিচালিত হবে বলে জানান তিনি।

তরফদার রুহুল সাইফ বলেন, দেশের জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে। পরিবেশবান্ধব এ টার্মিনাল থেকে বছরে ৩ লাখ ৫০ হাজার টিইইউএস কন্টেইনার পরিবহণ এবং ১ লাখ ২৫ হাজার টিইইউএস কনসুলেশান সেন্টার হবে। যা দেশের আমদানী-রপ্তানী খাতে বিশাল খরচ কমবে। তাছাড়া, দেশের রপ্তানী খাতে এই টার্মিনাল গুরুত্ত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন মাল্টিমডাল কন্টেইনার টার্মিনালের প্রস্তাবিত স্থান পরিদর্শন শেষে মাটি কেটে কাজের উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে রেলওয়ের সহযোগী প্রতিষ্ঠান কন্টেইনার কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বেলাল হোসেন বলেন, মাল্টিমডাল কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণে বাংলাদেশ রেলওয়ের আর্থিকভাবে লাভবান হবে। সর্বোপরি দেশের রাজস্ব আদায়ে এই মাল্টিমডাল টার্মিনালের ভূমিকা রাখবে বলে জানান তিনি।

পরে সাইফ পাওয়ার গ্রুপের পক্ষে সাইফ লজিস্টিকস অ্যালায়েন্স লিমিটেডের কনসালটেন্ট ইঞ্জি. রফিকুল ইসলাম মাল্টিমডাল কন্টেইনার টার্মিনালের স্থাপনার ব্যাপারে রেলমন্ত্রী ও রেলওয়ের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সামনে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.