পুঁজিবাজারে আগ্রহ বাড়ছে এসএমই খাতের

0

স্টকরিপোর্ট ডেস্ক : দেশের শেয়ারবাজারের মূল মার্কেট দোলাচলের মধ্য দিয়ে চললেও এসএমই মার্কেট চাঙ্গা। একসময় এই বাজারে ক্রেতা না থাকলেও এখন ব্যাপক চাহিদা। যে কারনে মূল মার্কেট পতনের ধারার মধ্যেও এসএমই মার্কেটে উত্থান রয়েছে। এছাড়া কয়েকদিন আগে এসএমই কোম্পানির কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর অফারে (কিউআইও) সাবস্ক্রিপশন পূরণ হওয়া নিয়ে শঙ্কা থাকলেও এখন ৫০ গুণ পর্যন্ত হচ্ছে।

এসএমই খাতের শেয়ারে আগ্রহ তৈরীর পেছনে সবচেয়ে বড় কারন হিসেবে রয়েছে বিনিয়োগকারীদের কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর হওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন জটিলতা লাঘব। যা আরও সহজ হয়েছে এই বাজারের কোম্পানিগুলোর লেনদেনযোগ্য শেয়ার সংখ্যা কম হওয়ার জন্য। এছাড়া কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর অবমূল্যায়িত পর্যায়ে থাকার কারনেও এক শ্রেণীর বিনিয়োগকারীর মধ্যে চাহিদা বেড়েছে।

গত ২৮ মার্চ বিকালে ডিএসইর ঘোষণা দেওয়ার আগ পর্যন্ত শেয়ারবাজারে এসএমইতে লেনদেন করার যোগ্য হওয়ার জন্য কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর হতে ডিএসইর ইএসএস ওয়েবসাইটে প্রদত্ত অনলাইন ফর্ম পূরণ করে, তা ডিএসইতে মেইল করতে হতো। এরপরে ডিএসই তা যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দিত। এরপরে একজন বিনিয়োগকারী ওই বাজারে লেনদেন করতে পারতেন। তবে এখন থেকে বিনিয়োগকারীদেরকে রেজিস্ট্রশন করা লাগবে না। পোর্টফোলিওতে ২০ লাখ টাকার বিনিয়োগ (ক্রয় মূল্য বা বাজার দরের সর্বোচ্চটা বিবেচ্য) থাকলেই ডিএসই স্বয়ংক্রিয়ভাবে রেজিস্ট্রেশন করে দেবে।

এই ঘোষণার পর থেকেই এসএমই মার্কেটের শেয়ার দরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিশেষ আগ্রহ তৈরী হয়েছে। যাতে করে শেয়ারগুলোর এখন দর বাড়ছে। যে শেয়ারগুলো এর আগে অভিহিত মূল্যের নিচে বা অবমূল্যায়িত পর্যায়ে ছিল। তবে এখন সব শেয়ারের দর ২০ টাকার উপরে। এরমধ্যে দু-একটি কোম্পানির অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির মতো ঘটনাও ঘটেছে।

বর্তমানে এসএমই মার্কেটের কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশিতে অবস্থান করছে ওটিসি থেকে আসা বেঙ্গল বিস্কুটের দর। এ কোম্পানিটির গত ৩ মাসে ৫৭% দর বেড়ে ১৫৯ টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮২.১০ টাকায় অবস্থানে রয়েছে ৫০ লাখ শেয়ার ইস্যু করা স্টার অ্যাডহেসিভের দর।

নিম্নে গত ৩ মাসে এসএমই কোম্পানিগুলোর দর বৃদ্ধির তথ্য তুলে ধরা হল-


এই মার্কেটে হঠাৎ করে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের অন্যতম কারন হিসাবে রয়েছে তুলনামূলক কম শেয়ার দর। এছাড়া লেনদেনযোগ্য শেয়ার সংখ্যা কম। এছাড়া মূল মার্কেটে একটি নতুন কোম্পানির শুরুতে কয়েক গুণ দর বৃদ্ধি স্বাভাবিক হলেও এখানে সেটা হয়নি। যাতে অবমূল্যায়িত ছিল এসএমইর কোম্পানিগুলোর দর।

এসএমই মার্কেটে ওটিসি থেকে ৪টি আনা হলেও বাকি ৯টি নতুন কোম্পানি। আইপিওর ন্যায় অর্থ সংগ্রহ করে লেনদেন শুরু হয়েছে। সেসব শেয়ারও অভিহিত মূল্যের নিচে ছিল। তবে মূল মার্কেটে এমন নতুন শেয়ারে শুরুতে টানা দর বৃদ্ধির মাধ্যমে কয়েক গুণ হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক ঘটনা।

এসএমই মার্কেটের শেয়ার দর বৃদ্ধিতে অনুসন্ধান করেছে ডিএসই। এতে নিয়ালকো অ্যালয়েজ, এপেক্স ওয়েভিং, ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়েজ, স্টার অ্যাডহেসিভের শেয়ার দর অস্বাভাবিক বেড়েছে বলে জানিয়েছে ডিএসই কর্তৃপক্ষ।

এসএমই মার্কেটে লেনদেন হওয়া নতুন কোম্পানিগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেনযোগ্য শেয়ার সংখ্যা কোম্পানি কৃষিবিদ ফিডের। এ কোম্পানিটি ২২ কোটি টাকা সংগ্রহে ২ কোটি ২০ লাখ শেয়ার ইস্যু করে, শুধুমাত্র সেগুলো লেনদেনযোগ্য। এরপরের অবস্থানে থাকা বিডি পেইন্টসের ১ কোটি ২০ লাখ শেয়ার লেনদেনযোগ্য।

এদিকে ওটিসি থেকে আনা কোম্পানিগুলোরও সাধারন বিনিয়োগকারীদের হাতে থাকা লেনদেনযোগ্য শেয়ার সংখ্যা বেশি না। সবচেয়ে কম লেনদেনযোগ্য হিমাদ্রির শেয়ার। যে কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগকারীর আগ্রহ থাকলেও কোন বিক্রেতা থাকে না। এই কোম্পানিটির মাত্র ১১ হাজার ৭৭৫টি শেয়ার লেনদেনযোগ্য।

উল্লেখ্য, এসএমইতে আসা নতুন কোম্পানিগুলোর কিআইও বা শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের পূর্বে থাকা শেয়ারে ১ বছরের লক-ইন থাকে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.