‌মূলধন বেড়েছে শেয়ার বাজারের

0

স্টকরিপোর্ট প্রতিবেদক : দেশের শেয়ার বাজারে প্রথমবারের মতো সরকারি সিকিউরিটিজের লেনদেন শুরু হয়েছে গত মঙ্গলবার। শুরুর দিন দেশের প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ১১ হাজার ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ১ হাজার বন্ডের লেনদেন হয়েছে। এসব বন্ডের লেনদেন করেছে সিটি ব্রোকারেজ ও লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজ। এর মাধ্যমে শেয়ার বাজারে বন্ডের লেনদেনের ইতিহাসে নাম লেখায় এই দুই ব্রোকারেজ হাউজ।

সরকারি ছুটির কারণে গত রবিবার (৯ অক্টোবর) লেনদেন বন্ধ থাকায় বিদায়ী (১০-১৩ অক্টোবর) সপ্তাহে পুঁজিবাজারে মোট চার কর্মদিবস লেনদেন হয়েছে। এ চার দিনের মধ্যে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস দরপতনের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে। এরপরের দুই দিন সূচক বেড়েছে। তবে তারপর দিন কর্মদিবসে সূচক পতনের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে। অর্থাৎ চার দিনের মধ্যে দুই দিন সূচক বেড়েছে, আর দুই দিন কমেছে।

এদিকে এই ট্রেজারি বন্ডে ভর করে বাজার মূলধন বেড়েছে আড়াই লাখ কোটি টাকা। তারপরও গত সপ্তাহে এই সপ্তাহে দরপতন দেখলো দেশের মানুষ।

এদিকে বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে মূল্যসূচক। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ১০ অক্টোবর পুঁজিবাজারে সরকারি ২৫০টি ট্রেজারি বিল ও বন্ডের পরীক্ষামূলক লেনদেনের সুযোগ উন্মুক্ত হয়। তবে প্রথম ঘণ্টায় কোনও ইউনিট কেনাবেচা হয়নি। এ ট্রেজারি বন্ডগুলোর বাজার মূলধন ৩ লাখ ১৬ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ শেয়ারবাজারে ট্রেজারি বন্ডের লেনদেন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিএসইর বাজার মূলধন ৩ লাখ কোটি টাকার ওপরে বেড়ে যায়।

এদিকে, গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৫ লাখ ২১ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২ লাখ ৫২ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা। মূলত ট্রেজারি বন্ডের বাজার মূলধন যোগ হওয়ার কারণে এই বাজার মূলধন বেড়েছে।

অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন হয়েছে ২৫৩টি বন্ড। অর্থাৎ সিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা থেকে ৭ লাখ ৫৫ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে।

বাজারের তথ্য বলছে, মূলধন বাড়লেও গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে ১০১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৮টির। আর ১৬৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, লেনদেন হওয়া অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমায় বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ৭৫ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৪৯৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইর অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস সূচক ২৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪১৯ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ৫৩ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ৩০৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৭৫ দশমিক ২৬ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছিল ৫৬ দশমিক ৬২ পয়েন্ট । আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ৫৩ দশমিক ৫১ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছিল ৩১ দশমিক ১৫ পয়েন্ট।

প্রধান ও ডিএস-৩০ মূল্যসূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে কমেছে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচকও। গত সপ্তাহে এই সূচকটি কমেছে ২৩ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছিল ২৩ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট।

সবকটি সূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২০৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ১ হাজার ৩১৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১১১ কোটি ৩১ লাখ টাকা বা ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৪ হাজার ৮৩২ কোটি ৯২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৫ হাজার ২৭৮ কোটি ১৭ লাখ টাকা। সেই হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে হাজার ৪৪৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা।

একই অবস্থা হয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক ২২২ পয়েন্ট কমে ১৯ হাজার ১১০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এসময়ে লেনদেন হয়েছে ৭৩ কোটি ১৭ লাখ ৯৯ হাজার ৪৭৫ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৮৯ কোটি ১৯ লাখ ৯১ হাজার ৪২৫ টাকা। লেনদেন হওয়া ৩১৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৭১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের, কমেছে ১০৮টির আর অপরিবর্তিত ১৩৪টির দাম

Leave A Reply

Your email address will not be published.