আরএমজি কোম্পানির প্রচারে ডিএসই এবং বিজিএমইএর সমঝোতা স্মারক সই

0

 

স্টকরিপোর্ট প্রতিবেদক : ডিএসই এবং বিজিএমই যৌথভাবে পুঁজিবাজারের মাধ্যমে আরএমজি কোম্পানিগুলোর প্রচার ও পুঁজিবাজারের মাধ্যমে অর্থায়নের উদ্দেশ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) তহবিল সংগ্রহ ও তালিকাভুক্তির লক্ষ্যে রেডি-মেড গার্মেন্টস (আরএমজি) কোম্পানির তথ্য, প্রকাশনা এবং তথ্য প্রদান করা এবং পারষ্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তথ্য এবং ডেটা বিনিময় করার উদেশ্যে ডিএসই ও বিজিএমইএ এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক সাক্ষরিত হয়।
সমঝোতা স্মারক সাক্ষর করেন ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এম. সাইফুর রহমান মজুমদার এফসিএ এবং বিজিএমইর প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএসই’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু, পরিচালক মোঃ শাকিল রিজভী, শরীফ আনোয়ার হোসেন, ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এম সাইফুর রহমান মজুমদার এফসিএ, ডিএসই’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিজিএমইএ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ।

আরএমজি কোম্পানির উন্নতির জন্য জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা শেয়ার করা; উভয় প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে প্রশিক্ষণ/সেমিনার/ওয়ার্কশপ/সম্মেলন/সচেতনতামূলক পোগ্রাম/পুঁজিবাজার মেলা/অন্য যেকোন কর্মসূচির আয়োজন করা। রেডি-মেড গার্মেন্টস (আরএমজি) কোম্পানির কর্মকর্তাদের জন্য পুঁজিবাজারের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

সবুজায়নের অর্থনীতিকে উন্নীত করার জন্য লিডস সার্টিফাইড বা গ্রিন আরএমজি কোম্পানির বিষয়ে জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা বিনিময় করা। উভয় পক্ষই বিভিন্ন সামাজিক এবং সুশাসন (ইএসজি) সহযোগিতায় ইএসজি এবং টেকসই অর্থায়নের জন্য আরএমজি কোম্পানির সাথে একসাথে কাজ করা।

সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠানে ডিএসই’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু বলেন, আজকের দিনটি একটি বিশেষ দিন। দেশের অর্থনীতির প্রধান দুটি স্তম্ভ: ডিএসই এবং বিজিএমই-এর মধ্যে পারষ্পরিক সহযোগীতার একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হচ্ছে৷ এই সহযোগিতা শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক শক্তি বৃদ্ধি নয়, এটি একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার সম্মিলিত দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ।

ড. হাসান বাবু আরও বলেন, বাংলাদেশের জিডিপি’র প্রবৃদ্ধিতে বিজিএমই-এর অধীন গার্মেন্টস কোম্পানিগুলোর বিশাল ভূমিকা রয়েছে। ঠিক একইভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পুঁজিবাজারও বিশাল ভূমিকা রাখছে। বড় বড় কোম্পানিগুলো যত বেশি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে, পুঁজিবাজার তত বেশি সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশের অর্থায়ন মুলতঃ ব্যাংকের মাধ্যমে হয়ে থাকে, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল।

এটি আসলে পুঁজিবাজারের মাধ্যমে হওয়া উচিত। আর পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করতে ভাল ভাল গার্মেন্টস কোম্পানিগুলোর তালিকাভুক্তির প্রয়োজন। পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করা ডিএসই’র বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের অন্যতম উদ্দেশ্য। আমরা পুঁজিবাজারের মাধ্যমে আপনাদের উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আমরা প্রয়োজনে আপনাদের সাথে আবার বসবো, যাতে আপনাদেরকে পাশে নিয়ে গার্মেন্টস খাতের ভাল ভাল কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করে পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নেয়া যায়। আর এজন্য ডিএসই আপনাদের সব ধরণের সহযোগিতা করবে।

ড. হাসান বাবু আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের শীর্ষ গ্রীন ফ্যাক্টরীগুলো পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হলে বিদেশি ক্লায়েন্টের নিকট ব্র্যান্ডিং হবে এবং একটি স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাদের মূল্যায়ন বেড়ে যাবে। কারণ বিদেশি গ্রাহকরা সব সময় পাবলিক লিস্টেড কোম্পানি হওয়াকে অন্যতম গুণাবলী হিসেবে মনে করে। এ বিষয়ে বিজিএমইএ’র প্রেসিডেন্টও একমত পোষণ করেন।

এই সমঝোতা স্বাক্ষরের পরপরই ডিএসই ও বিজিএমইএ যৌথভাবে ২০২টি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী ও ৫০টি শীর্ষ রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠানের সাথে পর্যায়ক্রমে পুঁজিবাজারের সেবা প্রদান করার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। শীঘ্রই এ সংক্রান্ত সিডিউল ঘোষণা করা হবে। বিজিএমই-এর পক্ষ থেকে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পরপরই এ সংক্রান্ত তালিকা হস্তান্তর করা হয়।

বিজিএমইএ’র প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান ডিএসই’র চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জানিযে বলেন, বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ২০২টি গ্রীন ফ্যাক্টরী রয়েছে। বিশ্বের শীর্ষ ১৫ গ্রীন ফ্যাক্টরীর মধ্যে বাংলাদেশের রয়েছে ১৩টি। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে রেডিমেট গার্মেন্টসের গুরুত্ব খুবই তাত্পর্যপূর্ণ। ডিএসই ও বিজিএমইএ-এর সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে উভয় পক্ষ পুঁজিবাজারের গভীরতা বৃদ্ধিতে সহায়হক হিসেবে কাজ করবে।

পাশাপাশি দেশের আরএমজি সেক্টরে ব্র্যান্ডিংয়ে ডিএসই কাজ করবে। এই চুক্তির মাধ্যমে বিশ্বের শীর্ষ গ্রীন ফ্যাক্টরীগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য ডিএসই প্রয়োজনীয় মূলধন উত্তোলনের জন্য সর্বাত্মক সহযোগীতা করবে এবং এ বিষয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচী ও সেমিনারের আয়োজন করবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীগুলো সীমিত সংখ্যক ৫টি প্রোডক্ট নিয়ে কাজ করে। অথচ আরও একশটি পোডাক্ট নিয়ে কাজ করার সক্ষমতা রয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.