স্টকরিপোর্ট প্রতিবেদক: প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ২০১৬ সালে স্মার্টফোন থেকে ট্রেডিং অ্যাপ সুবিধা চালু করেছিল। করোনা মহামারীর আগে ব্রোকারেজ হাউসগুলির চাহিদা এবং ব্যবহারের ভিত্তিতে প্রায় এক লাখ সংযোগ বরাদ্দ করেছিল দেশের প্রধান শেয়ারবাজার প্রতিষ্ঠানটি।
স্মার্টফোনের মাধ্যমে ট্রেডিং অ্যাপ সুবিধা চালু করার পর থেকেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এটি ক্রমাগত জনপ্রিয় হয় উঠে। তবে দীর্ঘ এক বছর যাবত ডিএসই নতুন বিনিয়োগকারীদের এই সুবিধার সঙ্গে যুক্ত করতে পারেনি। ফলে নতুন বিনিয়োগকারীরা স্মার্টফোনের মাধ্যমে ট্রেডিং অ্যাপ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।
ডিএসই জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির পুরনো ব্রোকারেজ হাউজগুলোর মাধ্যমে বর্তমানে প্রায় ৭৫ হাজার বিনিয়োগকারী মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে লেনদেন করছেন।
ব্রোকারেজ হাউজগুলো বলছে, দীর্ঘদিন ধরে কোনো নতুন সংযোগ না থাকায় ব্রোকারেজ হাউজগুলো তাদের নতুন ক্লায়েন্টদের স্মার্টফোন থেকে ট্রেড সুবিধা দিতে সক্ষম হয়নি।
কিছু ব্রোকার হাউজ যাদের এখনও অব্যবহৃত বরাদ্দ রয়েছে তারা ছোট বিনিয়োগকারীদের অ্যাপটি ব্যবহার করতে দেওয়ার ক্ষেত্রে রক্ষণশীল ভূমিকায় রয়েছেন, যাতে বড় বিনিয়োগকারীদের জায়গা করে দিতে পারেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও আশানূরূপ ফলাফল পাচ্ছেন না।
অন্যদিকে, গত বছর নতুন করে যারা ডিএসইর ট্রেক বা ডিএসইর মালিকানা ছাড়া সদস্যপদ পেয়েছেন, তারা আরও বেশি হতাশার মধ্যে রয়েছেন। কারণ তাদের ট্রেডিং অ্যাপ সুবিধা ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ডিএসইর বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ কোনো রকম আশাবাদী বাণী শোনাতে পারছেন না।
এদিকে, কিছু শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউজ নিজস্ব অর্থায়নের মাধ্যমে নিজস্ব ট্রেডিং অ্যাপস এবং সিস্টেম প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে। তারা বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ তৈরিতে অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। তবে সিংহভাগ ব্রোকারেজ হাউজ এক্ষেত্রে বিশাল অর্থ বিনিয়োগ করতে সক্ষম না হওয়ার এটি তাদের নাগালের বাইরে। যে কারণে তারা নতুন বিনিয়োগকারীদের টানতে পারছেন না।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজ ও সিটি ব্রোকারেজ নিজস্ব ট্রেডিং অ্যাপস এবং সিস্টেম প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে। এসব হাউজের বিনিয়োগকারীরা বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে ঢাকার শেয়ারবাজারে ট্রেড করতে পারছেন। এছাড়াও, শান্তা সিকিউরিটিজ, শেলটেক ব্রোকারেজ এবং আরও কয়েক শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউজ নিজস্ব ট্রেডিং অ্যাপস পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করছে।
তবে আশার কথা হলো, ডিএসই-এর তথ্যপ্রযুক্তির আমূল সংস্কার করা হচ্ছে। সংস্করণের কাজ সম্পন্ন হলে ৩ লাখ বিনিয়োগকারী ডিএসই ট্রেডিং অ্যাপস পরিষেবা লাভ করবে।
উল্লেখ্য, ডিএসইকে প্রত্যেক ব্যবহারকারীর বিপরীতে প্রতি মাসে বিক্রেতা কোম্পানিকে ১ ডলার করে পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রতিষ্ঠানটি কোনো চার্জ নিচ্ছে না। এরমধ্যে কয়েকবার ট্রেডিং চার্জ আরোপের উদ্যোগ নিয়েও বাজারের অস্থিরতার কারণে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। তবে নতুন সংস্করণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনামূল্যে নাও হতে পারে জানিয়েছেন ডিএসইর সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তা।