পুঁজিবাজারের জন্য প্রণোদনা চায় বিএমবিএ

0

স্টকরিপোর্ট প্রতিবেদক : আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারের পার্থক্য কমানো, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো করপোরেট করহার কমানো, লভ্যাংশের ওপর কর প্রত্যাহার, তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাটহার কমানো এবং অপ্রদর্শিত আয় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ রাখার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ)।

আজ রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আগারগাঁওয়ে প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিসার) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের কাছে এসব প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে সংগঠনটি। এসময় বিএমবিএ’র প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বিএমবিএ জানিয়েছে, ২০১১ সাল থেকে পুঁজিবাজার বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের অন্যান্য আর্থিক সূচক ভালো থাকার পরও পুঁজিবাজারে তা সঠিকভাবে দৃশ্যমান নয়। তাই আমরা মনে করি, পুঁজিবাজারকে পেছনে রেখে উন্নতির অভীষ্ট লক্ষে পৌঁছানো যাবে না। তাই, পুঁজিবাজারের গতিশীলতা আনয়নে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এ বিষয়ে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে, যার ফল লক্ষণীয়। যেহেতু, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইনি কাঠামো সংশোধন/সংযোজন/পরিবর্তন/পরিবর্ধন করতে পারে এবং তারা সঠিকভাবেই তা করে যাচ্ছে। কিন্তু পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ফিসক্যাল ও রাজস্ব পলিসি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

পুঁজিবাজারের মাধ্যমে কর্মসংস্থান ও রাজস্ব বৃদ্ধি হয়। তাই পুঁজিবাজারের গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। পুঁজিবাজারের গতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য আসন্ন বাজেটে প্রস্তাবিত সুপারিশগুলো সদয় বিবেচনার জন্য সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি।

বাজেট প্রস্তাবের বিষয়ে বিএমবিএ জানিয়েছে, বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার এবং অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারের পার্থক্য মাত্র ৭.৫০ শতাংশ। তবে ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, টেলিকম, টোব্যাকো ইত্যাদি খাত ব্যতীত। অর্থাৎ তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য কর রেয়াত ৭.৫ শতাংশ আছে। ফলে, এ সুবিধা উদ্যোক্তাদের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য উৎসাহিত করে না। তাই, তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারের পার্থক্য ১৫ শতাংশ করার জন্য সুপারিশ করছি।

বর্তমানে মার্চেন্ট ব্যাংকের করহার ৩৭.৫০ শতাংশ, ব্রোকারের করহার ২৭.৫০ শতাংশ এবং সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানির করহার ১৫ শতাংশ। তাই মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো করপোরেট করহার ২৫ শতাংশ করার সুপারিশ করেছি।

লভ্যাংশের ওপর কর্পোরেট কর কর্তনের পর লভ্যাংশ প্রদান করা হয়। লভ্যাংশ প্রদানের সময় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ হারে অগ্রিম কর কর্তন করা হয়। পরবর্তীতে আবার লভ্যাংশ গ্রহীতার ব্যক্তিগত আয়কর রিটার্নের সময় তার ওপর প্রযোজ্য হারে কর প্রদান করতে হয়। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশ গ্রহণ না করে রেকর্ড ডেইটের আগেই শেয়ার বিক্রয় করে দেয়। ফলে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ না করায় শেয়ারবাজারকে অস্থির করে তুলে। তাই পুঁজিবাজারের গতিশীলতা আনয়নে লভ্যাংশের ওপর কর প্রত্যাহারের সুপারিশ করছি।

তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাট হার একই অর্থাৎ ১৫ শতাংশ। তাই তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাটহার হ্রাস করে ১০ শতাংশ করার জন্য সুপারিশ করছি।

এছাড়া অপ্রদর্শিত আয় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ প্রসঙ্গে বিএমবিএ জানিয়েছে, অপ্রদর্শিত আয় ৫ শতাংশ কর প্রদান করে শুধুমাত্র পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য আরও এক বছর সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন। এর ফলে, অপ্রদর্শিত অর্থ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি। অন্যথায় অপ্রদর্শিত অর্থ অপব্যবহারের সুযোগ থেকে যায়। অপ্রদর্শিত অর্থ অপব্যবহারের সুযোগ বন্ধের লক্ষে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য একটি সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.