ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর পুঁজিবাজার থেকে উধাও ৩৩ হাজার কোটি টাকা

0

 

স্টকরিপোর্ট প্রতিবেদক : প্রায় দেড় বছর পর পুঁজিবাজার থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার পর গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসেই বড় দরপতন হয়েছে। ৩০-৪০ শতাংশ কমে গেছে অনেক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম। তাতে সপ্তাহের ব্যবধানে পুঁজিবাজার থেকে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি অর্থাৎ বাজার মূলধন উধাও হয়েছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা।সেই সঙ্গে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। তবে বেড়েছে লেনদেনের গতি।

লাগাতার দরপতন ঠেকাতে চার বছরে কয়েক দফায় শেয়ারে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। প্রথমবার ২০২০ সালে মার্চে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করলেও তুলে নেওয়া হয় ২০২১ সালের জুলাইয়ে।

এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ২০২২ সালের জুলাইয়ে আবারও ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে বিএসইসি। এ পর্যায়ে শেয়ার লেনদেন ব্যাপক কমে গেলে সমালোচনায় পড়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সম্প্রতি ফ্লোর প্রাইস নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠলে গত ১৮ জানুয়ারি প্রথম ধাসে ৩৫টি প্রতিষ্ঠান বাদে সবগুলোর ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়। এরপর শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রভাব দেখা দিলে ২১ জানুয়ারি আরও ২৩ প্রতিষ্ঠান থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়।

তবে তৃতীয় দফায় ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার গুজবে গত সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবস টানা দরপতন হয়। এতেই সপ্তাহের ব্যবধানে বড় পতন দেখতে হয় বিনিয়োগকারীদের। একই সপ্তাহেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমেছে প্রায় ৩ শতাংশ। বাজার মূলধন কমেছে ৪ শতাংশের ওপরে। তবে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ায় লেনদেনে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ৩৩ শতাংশের বেশি।

বাজার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে,বিদায়ী সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৫৪ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা। যা গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৮৭ হাজার ৯০৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৩২ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা বা ৪ দশমিক ১৮ শতাংশ।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে ৪ হাজার ৮৫২ কোটি ১৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৩ হাজার ৬৩৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন বেড়েছে ১ হাজার ২১৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা বা ৩৩ দশমিক ৪০ শতাংশ।

বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ১৮০ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট কমেছে। সপ্তাহ শেষে সূচকটি অবস্থান করছে ৬ হাজার ১৫৬ পয়েন্টে।প্রধান সূচকের সঙ্গে ‘ডিএসই-৩০’ সূচক এক সপ্তাহে ১৫ দশমিক ১০ পয়েন্ট হারিয়েছে। আর ‘ডিএসইএস’ বা শরীয়াহ সূচক কমেছে ৩৬ দশমিক ০১ পয়েন্ট।

গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ৪০৭ প্রতিষ্ঠান শেয়ার লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ১৪টির শেয়ারের দর অপরিবর্তিত ছিল। অপরদিকে দর বৃদ্ধি পেয়েছে ৭৪টির, বিপরীতে কমেছে ৩০৮ কোম্পানির শেয়ারদর।

Leave A Reply

Your email address will not be published.