লেনদেন কমে গেছে শেয়ারবাজারে

0

স্টকরিপোর্ট প্রতিবেদক : দেশের শেয়ারবাজারে আবারও লেনদেন কমে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রায় দেড় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে। ডিএসইতে এদিন লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৫৮১ কোটি টাকা।

এর আগে, সর্বশেষ গত ২৬ মে ডিএসইতে সর্বনিম্ন ৫৩৯ কোটি টাকার লেনদেন হয়। লেনদেন কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বিভিন্ন পর্যায়ের বিনিয়োগকারীদের নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করছেন বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। মনে করা হচ্ছে ঈদের ছুটি কাটিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বড় অংশ এখনও বাজারে সক্রিয় হয়নি। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের একটি অংশও বিনিয়োগ করছে না।

জানা গেছে, শেয়ারবাজারে শীর্ষ লেনদেনকারী কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ কর্মকর্তারা এখনও ছুটিতে আছেন। সে জন্য ওই সব ব্রোকারেজ হাউস বিনিয়োগে তেমন একটা সক্রিয় নেই। এ ছাড়া ঈদের ছুটির পর বাজারে দরপতন ঘটতে থাকায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও নতুন করে বিনিয়োগ করছেন না। এতে লেনদেনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

বাজারের তথ্য বলছে, ঈদের পর বাজার মূলধন কমেছে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। ঈদের পর সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে মূল্যসূচক। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা কমে গেছে।

বাজার মূলধন কমার পাশাপাশি গত সপ্তাহে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। ঈদের ছুটির কারণে গেলো সপ্তাহের রবিবার ও সোমবার (১০ ও ১১ জুলাই) শেয়ারবাজারে লেনদেন হয়নি। এতে গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে লেনদেন হয় মোট তিন কার্যদিবস। এ তিন কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ১৪ শতাংশের বেশি।

গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ১৫ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৫ লাখ ১৮ হাজার ৭৭২ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ২ হাজার ৮১২ কোটি টাকা।

বাজার মূলধন কমার পাশাপাশি গত সপ্তাহে ডিএসইতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১১৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়লেও দাম কমেছে ২৩৪টির। আর ৩৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪২ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমেছিল ৯ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গেলো সপ্তাহে কমেছে ১৯ দশমিক ৯২ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমেছিল ১ দশমিক ৮২ পয়েন্ট।

এছাড়া গত সপ্তাহে ইসলামী শরিয়াহভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকও কমেছে। গত সপ্তাহে এই সূচকটি কমেছে ১০ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছিল ১ দশমিক ১১ পয়েন্ট।

বাজারের তথ্য বলছে, গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৬৫৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৭৬২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১০৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বা ১৪ দশমিক ২৪ শতাংশ।

আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯৬২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৩ হাজার ৮১৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ১ হাজার ৮৫১ কোটি ৪১ লাখ টাকা বা ৪৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে টাকার অংকে সব চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে এই কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২৪ কোটি ৩ লাখ ৯ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ৩২ শতাংশ।

এদিকে পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক ১৫৬ পয়েন্ট কমে ১৮ হাজার ৫৯৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এই সময়ে লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ৯৩ লাখ ৯২ হাজার ৯৮৩ টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৯৬টির, কমেছে ২১০টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ২৩টির দাম।

Leave A Reply

Your email address will not be published.